Free Porn
xbporn

https://www.bangspankxxx.com

১৪ ই ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস: ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি ও আমাদের সমাজ

Date:

১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস ডে বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। সারাবিশ্বে এ দিবসটি উদযাপিত হবে। ভালোবাসা মহান আল্লাহর দান। তাই ভালোবাসার জন্য কোনো ক্ষণ, দিবস-রজনী নির্দিষ্ট নেই। ভালোবাসার স্রোত সব সময় বহমান। বিবাহ পূর্ব তরুণ-তরুণীর পরস্পর দেখা-সাক্ষাত, কথা-বার্তা-মেলামেশা, প্রেম-ভালবাসা ইসলাম ধর্মে সম্পূর্ণভাবে হারাম।

কুরআন-হাদিসের দৃষ্টিতে ভালবাসা কেবল বিয়ের পরেই। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে ভালবাসা সৃষ্টি হয় এর মধ্যে অনেক সওয়াবও কল্যাণ রয়েছে। বিবাহের আগে একে অন্যকে অবৈধ ভালবাসা হারাম। ভালবাসা শব্দটি পবিত্র। ভালবাসা এমন এক বস্তু যা মানুষের মনের গহিনে প্রবিষ্ট হয়ে থাকে। ভালবাসা সকল মাখলুকাতের মাঝে রয়েছে। একে অন্যের মধ্যে প্রীতি স্থাপনের জন্য রাহমানুর রাহিম আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক প্রাণীর মধ্যেই ভালবাসা তৈরী করে দিয়েছেন।

ভালবাসার কারণেই জন্মদাতা মা কত কষ্ট করে সস্তানকে গর্ভধারণ করেন। আবার কৈশোর কাল পর্যন্ত অতিকষ্টে লালন করেন। পিতা তাঁর সন্তানকে কঠোর পরিশ্রম করে ভাল মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। ভালবাসার কারণেই বন-জঙ্গলের হিংস্র প্রাণিগুলোও স্বজাতিদের নিয়ে একসাথে বসবাস করে। ভালবাসা আল্লাহর মহান দান। সৃষ্টি জগতের প্রতি ভালবাসার টান হওয়াটই স্বাভাবিক। তবে ভালবাসার জন্য কোন ক্ষণ, দিবস-রজনীর প্রয়োজন নেই। আমাদের সমাজের রন্দ্রে-রন্দ্রে আজ বিজাতীয় অপসংস্কৃতির সয়লাব। বিজাতীয় কৃষ্টি-কালচার অনুসরণ থেকে মুক্ত নন অনেক সচেতন মুসলমান নর-নারীরাও। ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি অপসংস্কৃতির বিষাক্ত ছোবল।

হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, যারা আমার সন্তুষ্টির আশায় পরস্পরকে ভালবাসে, আমার রেজামন্দির আশায় পরস্পর বৈঠকে মিলিত হয়, আমার সন্তুষ্টির কামনায় পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ করে এবং আমার ভালবাসার জন্যই নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদেরকে ভালবাসা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে যায়। (-মুয়াত্তা)

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাাম এরশাদ করেছেন আল্লাহ তা’য়ালার বান্দাগণের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে, যারা নবীও নয় আর শহীদও নয়। কিন্তু বিচার দিবসে তাদের মর্যাদা দেখে নবী ও শহীদগণ তাদের উপর ঈর্ষা করবেন। জিজ্ঞেস করা হল- হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা? উত্তরে তিনি বললেন: তারা হচ্ছে সেই সব লোক, যারা শুধু আল্লাহর মহব্বতে একে অপরকে মহব্বত করেছে। তাদের মধ্যে নেই কোন রক্তের সম্পর্ক নেই কোন বংশের সম্পর্ক। তাদের মুখমন্ডল হবে জ্যোতির্ময় এবং তারা নুরের মিম্বরের উপর অবস্থান করবে। কিয়ামতের বিভীষিকাময় অবস্থায় মানুষ যখন ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে তখন তারা ভীত হবে না আর মানুষ যখন দুঃখে থাকবে তখন তাদের কোন দুঃখ থাকবে না। -(তিরমিজি)

ভ্যালেন্টাইনস ডে পরিচিতি: ভালোবাসা দিবস বা সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’স ডে একটি বার্ষিক উৎসবের দিন যা ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা এবং অনুরাগের মধ্যে উদযাপিত হয়। দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হয়ে থাকে, যদিও অধিকাংশ দেশেই দিনটি ছুটির দিন নয় ।

২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’স নামে একজন খৃষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচারের অভিযোগে তৎকালীন রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাকে বন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খৃষ্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দী অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টিহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। আর তাই তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেন্টাইন’স স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন’ দিবস ঘোষণা করেন। খৃষ্টানজগতে পাদ্রী-সাধু সন্তানদের স্মরণ ও কর্মের জন্য এ ধরনের অনেক দিবস রয়েছে। যেমন: ২৩ এপ্রিল – সেন্ট জজ দিবস, ১১ নভেম্বর – সেন্ট মার্টিন দিবস, ২৪ আগস্ট – সেন্ট বার্থোলোমিজম দিবস, ১ নভেম্বর – আল সেইন্টম দিবস, ৩০ নভেম্বর – সেন্ট এন্ড্রু দিবস, ১৭ মার্চ – সেন্ট প্যাট্রিক দিবস।

পাশ্চাত্যের ক্ষেত্রে জন্মদিনের উৎসব, ধর্মোৎসব সবক্ষেত্রেই ভোগের বিষয়টি মুখ্য। তাই গির্জা অভ্যন্তরেও মদ্যপানে তারা কসুর করে না। খ্রীষ্ট্রীয় এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের চেতনা বিনষ্ট হওয়ায় ১৭৭৬ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ভ্যালেইটাইন উৎসব নিষিদ্ধ করা হয়। ইংল্যান্ডে ক্ষমতাসীন পিউরিটানরাও একসময় প্রশাসনিকভাবে এ দিবস উদযাপন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এছাড়া অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও জার্মানিতে বিভিন্ন সময়ে এ দিবস প্রত্যাখ্যাত হয়। সম্প্রতি পাকিস্তানেও ২০১৭ সালে ইসলাম বিরোধী হওয়ায় ভ্যালেন্টাইন উৎসব নিষিদ্ধ করে সে দেশের আদালত।

বর্তমানকালে, পাশ্চাত্যে এ উৎসব মহাসমারোহে উদযাপন করা হয়। যুক্তরাজ্যে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক প্রায় ১০০ কোটি পাউন্ড ব্যয় করে এই ভালোবাসা দিবসের জন্য কার্ড, ফুল, চকোলেট, অন্যান্য উপহারসামগ্রী ও শুভেচ্ছা কার্ড ক্রয় করে এবং আনুমানিক প্রায় ২.৫ কোটি শুভেচ্ছা কার্ড আদান-প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশেও বর্তমানে এই দিবস পালন খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে তরুণ সমাজের কাছে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি ও বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির মিশ্রণে ভিন্নভাবে “বিশ্ব ভালোবাসা দিবস” নামে এটি পালিত হয়। বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ১৩ই ফেব্রুয়ারি তারিখে বসন্ত উৎসব তথা “পহেলা ফাল্গুন” উদযাপিত হয়। তার ঠিক পরের দিনই ভালোবাসা দিবস পালন করা হয় বিধায় অনেকের কাছেই এই দিবসটি বেশ উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। তবে কখনো কখনো অধিবর্ষের কারণে পহেলা ফাল্গুন এবং ভালোবাসা দিবস একই দিনে পালিত হয়। তখন বাংলাদেশের অধুনা তরুণ সমাজের কাছে আরও ভিন্ন উপায়ে উদযাপন করতে উৎসাহিত হয়। এই “ভালোবাসা দিবস” পালন করার আয়োজন হিসেবে সামাজিক গণমাধ্যম খুব বড় একটা ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন ফুলের দোকান, ফ্যাশন হাউজ, উপহার এর দোকান, বেকারি ও ফাস্ট ফুড দোকানগুলোতে বিশেষ কিছু অফার চালু রাখে।

বাংলাদেশে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস নিয়ে ঐতিহ্যগত ও রাজনৈতিক বিতর্ক: বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবস পালন নিয়ে নানামূখী বিতর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের কেউ কেউ মনে করেন, এ দিনটি উদযাপন করা সংস্কৃতি এবং ইসলাম ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য নয়। ভালোবাসা দিবস নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও রয়েছে। ভালোবাসা দিবস পালনের আগে বাংলাদেশে ১৪ ই ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার বিরোধী দিবস হিসেবে পালন করা হতো। ১৯৮৩ সালে সেই সময়কার সরকারের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে স্মারকলিপি দিতে শিক্ষার্থীরা মিছিল করে সচিবালয়ের দিকে যাবার সময় পুলিশ গুলিতে ১০ জন নিহত হয়েছিলো। তবে ভালোবাসা দিবস পালন করতে গিয়ে সে দিবস ছাপিয়ে গেছে। সরকার নিজেদের স্বার্থেই এ দিবস পালন অব্যাহত রেখেছেন বলে কারো ধারণা।

বাংলাদেশে এ দিবসটি পালন করা শুরু হয় ১৯৯৩ ইং সালে। বাংলাদেশে হলদে কিছু মিডিয়া এর আমাদানী করত, অপরিণামদর্শী হলদে মিডিয়া কর্মীরা এর ব্যাপক কভারেজ দেয়। এখন বিশ্বব্যাপি এ দিবসটি ভালবাসা দিবস হিসেবে উদযপিত হচ্ছে। এ দিবস এলেই দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীরা, বিশেষ করে যুবক-যুবতীরা প্রেমের জোয়ারে বেসামাল হয়ে উঠে। নিজেদের রূপ-সৌন্দর্য উজাড় করে প্রদর্শনের জন্য রাস্তায় নেমে আসে। শুধু তাই নয় অঙ্কন শিল্পীরা উল্কি আঁকার জন্য পসরা সাজিয়ে বসে থাকে রাস্তার পাশে। তাদের সামনে তরুণীরা পিঠ, বাহু আর হস্তদ্বয় মেলে ধরে পছন্দের উল্কিটি এঁকে দেয়ার জন্য। তারপর রাত পর্যন্ত নীরবে-নিবৃতে প্রেমিক-প্রেমিকার খোশ গল্প, অসামাজিকতা, অনৈতিকতা, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, নগ্নতা, সবশেষে কখনো কখনো অবৈধ যৌন মিলন ও ধর্ষণ। বর্তমানে এটাই হলো বিশ্ব ভালবাসা দিবসের বাস্তব চিত্র!

তাহলে বিশ্ব ভালবাসা দিবসের মর্যাদা রইলো কোথায়? অশ্লীলতা-নোংরামীতে ভরপুর বিশ্ব ভালবাসা দিবস! ভালবাসা দিবস উদযাপনের নামে এমন বেহায়াপনা কর্মকান্ড ইসলাম সমর্থন করে না। শুধু একদিন কেনো, ভালবাসার স্রোত সবসময় চলমান। ভালবাসা হবে কেবল আল্লাহর জন্য, রাসুলের সা. জন্য। ভালবাসার মধ্যে যখন দুনিয়াবী কোন চাওয়া-পাওয়া, নফসের কোন কামনা-বাসনা আর জৈবিক কোন লালসার লেশমাত্র থাকে না বরং কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ অর্জনের জন্যই নিবেদিত হয়- তখন সে ভালবাসার মাধ্যমে মানব জীবনের চুড়ান্ত লক্ষ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।

তাই আসুন-ভালবাসার নামে সকল বেহায়াপনা পরিহার করে ইসলামের দেয়া সংস্কৃতি আনুসরণ করে ইসলামের আলোয় আলোকিত জীবন গঠন করে আখেরাতের মুক্তির পথ সুগম করি।

লেখক: খন্দকার আবু সুফিয়ান, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী।
এম এ(হাদীস), রাষ্ট্রবিজ্ঞান(অনার্স)।
অষ্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলে ফের বন্দুক হামলা, নিহত ৪

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার একটি হাইস্কুলে আবারও বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত চারজন...

শেখ হাসিনাকে ভারতে চুপ থাকতে হবে: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একহাত নিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা...

ইসলামী ব্যাংকের ঋণের অর্ধেকের বেশি টাকা নিয়েছে এস আলম

দেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ইসলামী ব্যাংকের মোট ঋণের...

বেক্সিমকো গ্রুপের সম্পদ দেখভালে রিসিভার নিয়োগের নির্দেশ হাইকোর্টের

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান...