শীতে প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু খেলে ঠাণ্ডা লাগা, কাশির সমস্যা কমে যায়। তবে খেতে হবে আসল-খাঁটি মধু।
বাজারে বিশেষ করে আজকাল অনলাইন শপগুলোতে খাঁটি মধু পাওয়া যায় বলে প্রচারণা দেখা যায়। তবে অনেকের মনে সন্দেহ রয়েছে এই মধু আসলেই খাঁটি তো! নকল মধুগুলোতে বেশি লাভের জন্য চিনির সিরাপ মেশানো হয়। উপকারের আশায় নকল মধু খেয়ে, উপকার তো পাই-ই না, বরং ক্ষতি হয় আমাদের। তাহলে মধু চেনার উপায় জেনে নিন:
নকল মধু
• নকল মধুতে ফেনা হয়
• একটু টকটক গন্ধ থাকে বা গন্ধ তেমন ভালো হয় না
• বেশ পাতলা হয়
• তলানিটা খসখসে থাকে
• স্তরগুলো আলাদা করা যায়
আর খাঁটি হলে
• সামান্য মধু আঙুলে নিন, এর ঘনত্ব দেখুন। আসল মধু অনেক বেশি আঠালো হবে
• একগ্লাস পানিতে মধু ড্রপ আকারে ছেড়ে দিন, খাঁটি মধু ড্রপ অবস্থায়ই গ্লাসের নিচে চলে যাবে
• মধুতে পিঁপড়া ধরবে না
• দীর্ঘদিন থাকলেও মধুর নিচে জমাট বাঁধবে না।
মধুতে প্রায় ৪৫টিও বেশি খাদ্য উপাদান থাকে। তবে এতে সাধারণত কোনো চর্বি ও প্রোটিন নেই। প্রতি ১শ গ্রাম মধু থেকে আমরা ৩০৪ ক্যালরি পাই।
এবার মধু খাওয়ার গুণগুলো জানি:
ত্বকের সমস্যায় মধু: ত্বকের অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় অলিভ অয়েল ও মধু মিশিয়ে লাগালে ত্বকের সমস্যা দূর হয়। সেক্ষেত্রে মধু অবশ্যই খাঁটি হতে হবে।
ক্ষত বা পোড়া স্থানে মধু: বেশ কিছু রোগের জীবাণু নাশে মধুর জুড়ি নেই। পোড়া বা ক্ষতের স্থানে মধু লাগালে উপকার হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি: মধুতে যথেষ্ট পরিমাণে কপার, মানে তামা, আয়রন ও ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
কাশি: সমপরিমাণ আদারস এবং মধুর মিশ্রণ কাশির সাহায্যে শ্লেষ্মা বের করে ফেলার একটি সহায়ক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এটি ঠাণ্ডা, কাশি, কণ্ঠনালির ক্ষত, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি থেকে দ্রুত পরিত্রাণ দেয়।
হাঁপানি: আধা গ্রাম গুঁড়া করা গোলমরিচের সঙ্গে সমপরিমাণ মধু এবং আদা মেশান। দিনে অন্তত তিনবার এই মিশ্রণ খান। এটা হাঁপানি রোধে সহায়তা করে।
রক্তচাপ: দু-চামচ মধুর সঙ্গে এক চামচ রসুনের রস মেশান সকাল-সন্ধ্যা দুইবার এই মিশ্রণ খান। প্রতিনিয়ত এটার ব্যবহার উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখতে: এক চামচ মৌরি গুঁড়ার সঙ্গে এক বা দু-চামচ মধুর মিশ্রণ হৃদরোগের টনিক হিসেবে কাজ করে। এটা হৃৎপেশিকে সবল করে এবং এর কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
রক্ত পরিষ্কার করে চর্বি কমায়: এক গ্লাস গরম পানির সঙ্গে এক বা দুই চামচ মধু ও এক চামচ লেবুর রস মেশান। পেট খালি করার আগে প্রতিদিন এই মিশ্রণ খান। এটা রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি পেট পরিষ্কার ও মেদ কমাতেও সাহায্য করে।
দৃষ্টিশক্তি: গাজরের রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। এজন্য প্রতিদিন সকালে খাবার এক ঘণ্টা আগে মধু খাওয়া উচিত।
মাড়ির ইনফেকশনে: মাড়ির ব্যথায় মুখ কুলকুচি করার জন্য মধু মিশ্রিত পানি বা ‘মাউথওয়াশ’ ব্যবহার করলে মাড়ির ব্যথা কমে।
সৌন্দর্যচর্চায় মধু: শুধু শরীর নয়, সৌন্দর্যচর্চাতেও রয়েছে মধুর বড় ভূমিকা। রাসায়নিক পদার্থের প্রসাধন সামগ্রীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করতে নানা উপায়ে মধু ব্যবহার করা হয়। মধু ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে।
এমজে/