জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষার পাঁচ দফা প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর

Date:

ভিশন ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য পাঁচ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করে জোরালো আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।

তিনি তাঁর প্রথম প্রস্তাবে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে পৃথিবীকে এবং নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য আমি রাজনৈতিক নেতৃত্বকে অবশ্যই জোরালো আন্তর্জাতিক সহযোগিতা উৎসাহিত করার পরামর্শ দেব।’ প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৫তম সাধারণ অধিবেশন (ইউএনজিএ)’র সাইডলাইনে জলবায়ুু সংক্রাস্ত উচ্চ পর্যায়ের একটি ভার্চুয়াল গোলটেবিল আলোচনায় এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এ প্রস্তাব দেন।

প্রধানমন্ত্রী তার দ্বিতীয় প্রস্তবনায় বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখতে হবে এবং সমস্ত প্যারিস প্রবিধান বাস্তবায়ন করতে হবে।

তৃতীয়ত, তিনি বলেন, দুর্বল দেশগুলোকে প্রতিশ্রুত তহবিল সরবরাহ করতে হবে।

চতুর্থ প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, দূষণকারী দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় প্রশমন ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের এনডিসি (জাতীয় নির্ধারিত অবদান) বাড়াতে হবে।

পঞ্চম প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, জলবায়ু শরণার্থীদের পুনর্বাসন একটি বৈশ্বিক দায়িত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ জানানোয় জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, অভিযোজন এবং সহিষ্ণুতার বিষয়ে বিনিময় করার মতো কিছু ধারণা ও অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের রয়েছে। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও জল ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রস্তুত করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশে ৪ হাজার ২৯১ টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র এবং ৫২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করেছে এবং যে কোনো ঘূর্ণিঝড়ের আগে প্রস্তুতি সহজ করতে ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, ‘এজন্য আমরা ‘রীপ’ (ঝুঁকি-অবহিত আর্লি অ্যাকশন পার্টনারশিপ) উদ্যোগে অংশ নিয়েছি, যার লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে এক বিলিয়ন মানুষকে বিপর্যয় থেকে নিরাপদ করা।’
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ সিভিএফ (জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরাম)-এর বর্তমান চেয়ার এবং সম্প্রতি ঢাকায় গ্লোবাল সেন্টার অব অ্যাডাপ্টেশনের আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস গোলটেবিলটি আহ্বান করেন এবং যুক্তরাজ্যের সাংবাদিক ফেমি ওকে এটি পরিচালনা করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ৯০ মিনিট স্থায়ী এ গোলটেবিল বৈঠকে সূচনা ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন, যেখানে সারাবিশ্বের সরকারি, বেসরকারি খাত ও নাগরিক সমাজের প্রায় ২০ জন জলবায়ু নেতা অংশ নেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ইতালির প্রধানমন্ত্রী গিউসেপে কঁতে, চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান তিনেরা ইচেনিক, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মাহামাদু ইসুফৌ, ফিজির প্রধানমন্ত্রী জোসাইয়া বোরেকি বাইনিমারামা, ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন্ডারলেইন, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে সেরিং উচ্চ পর্যায়ের এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

জাতিসংঘ মহাসচিবের জলবায়ু এ্যাকশন এন্ড ফাইন্যান্সের বিশেষ দূত মার্ক কার্নি, মাইক্রোশফট ব্র্যাড স্মিথের সভাপতি, ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমার, ইউরোপিয়ান ক্লাইমেট ফাউন্ডেশন লরেন্স কিউবি, ব্রাজিলের বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংকের ইতাউ ইউনিবাংকোর প্রধান নির্বাহী কেনডিডো বোতেলহো ব্রাচার, গ্লোবাল সিমেন্ট এন্ড কংক্রিট এসোসিয়েশনের (জিসিসিএ) প্রধান নির্বাহী দিনা ম্যাকলিওটও গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন।
সূত্র: বাসস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

চট্টগ্রামে বাস-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৭

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে বাসের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে সাতজন নিহত...

অতিরিক্ত ডিআইজি হলেন ১৫২ কর্মকর্তা

বাংলাদেশ পুলিশে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পেয়েছেন পুলিশের আরও...

বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র...

বৈঠক শেষ, পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা হয়নি

তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণী ষষ্ঠ সভা শেষ হয়েছে।...