নিজস্ব সংবাদদাতা: শীতের পরশে কিশোরগঞ্জ হাওরের প্রতিটি উপজেলা সেজেছে নতুন রূপে। এই শীতে খাল, বিল, নদী ও বন ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি হাওরে নতুন মাত্রা যোগ করেছে অতিথি পাখি। বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার পাখির কলকাকলিতে মুখরিত বিস্তীর্ণ হাওর ও জলাশয়।
শীত এলেই এসব পাখি উত্তরমেরু, সাইবেরিয়া, নেপাল, চীন ও তিব্বতসহ বিভিন্ন শীত প্রধান দেশ থেকে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আমাদের দেশে এসে সাময়িক আশ্রয় নিয়ে শীতের শেষে আবার নিজ দেশে ফিরে যায়। বর্তমানে হাওরে যেসব পাখির দেখা মেলে এরমধ্যে বালিহাঁস, লেঞ্জা হাঁস, টিকিহাঁস, বোনোহাঁস, কয়রা, চখাচখি, কার্কিও, ছোট শারস, নিশাচর, হেরণ, ডুবুরি পাখি, কাঁদা খোচা, রাজসরালি, পাতিকুট, গাংচিল, কমন পেচার্ড, সরালি,ফিস ঈগল ,কালোকোট উল্লেখযোগ্য।
অতিথি পাখিরা আমাদের পরিবেশের পরম উপকারী বন্ধু। এরা বিভিন্ন জলাশয় ও ফসলী জমিতে অবস্থান করে ক্ষতিকারক পোকামাকর ও জলজ উদ্ভিদ খেয়ে আমাদের উপকার করে। তাদের মল মাছের প্রিয় খাবার ও জমির উর্বরাশক্তি বাড়ায়। পরিবেশ অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের উদ্যোগে সুনামগঞ্জের হাকালুকি ও কিশোরগঞ্জের বড় হাওরে ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসের পাখি জরীপ হয়। এ জরীপ অনুযায়ী এখানে ৪১ প্রজাতির প্রায় ১লক্ষ ২৭হাজার পাখির সন্ধান মেলে। যা ২০০৮সালের তুলনায় প্রায় আড়াই গুন বেশী। যার সংখ্যা ২০২০-২১ সালে এসে আরও বেড়েছে বলে জানা যায়।
কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য হাওরে এসব পাখির নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা নেই। এক শ্রেণীর শিকারী রাতের আধাঁরে জাল ফেলে হাওরের এসকল পাখি ধরে অষ্টগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে চড়া মূল্যে বিক্রি করছে। একেকটি পাখি ৪০০ থেকে ৭০০টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। শীতের শেষে যখন অতিথি পাখিদের নিজ দেশে ফিরে যাবার সময় হয় তখন অর্ধেক পাখিরও দেখা মেলেনা।
এ বিষয়ে অষ্টগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম মোল্ল্যা জানান, আমাদের দেশে অতিথি পাখি নিয়ন্ত্রন ও সংরক্ষণ আইন রয়েছে। এ আইন অনুযায়ী অতিথি পাখি শিকার দন্ডনীয় অপরাধ। এ আইন অমান্যকারীর সর্বোচ্চ এক বছর জেল ও এক হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।