নিজস্ব সংবাদদাতা: কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামের বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়নে সরকারি খাস জায়গা দখল করে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করে আসছে জোনাকী ব্রিক ফিল্ড। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইনের যথাযথ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন যাবত ইট তৈরী করে আসছে এই ইট ভাটার মালিকপক্ষগণ।
লোকালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপনে নিষেধ থাকা সত্বেও ইট ভাটাটি বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়নের নোয়াগাঁও এলাকার পরিবেশ দূষণ করে যাচ্ছে। এই ভাটাটির নেই কোন সরকারি অনুমোদন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, গ্যাস ও ধুলায় জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে। হারিয়ে যাচ্ছে জীব-বৈচিত্র, বিনষ্ট হচ্ছে চিরচেনা প্রকৃতি ও পরিবেশ।
স্থানীয় বাসিন্দা ইসলাম উদ্দিন, আমিন মোল্লাসহ এলাকাবাসীগণ প্রতিবেদককে অভিযোগ করে বলেন, বসত বাড়ির পাশে ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোয়ায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছি। গাছের ফল-ফলাদিও কমে গেছে। আবার নদী ভরাট করে যেভাবে দখল করা হচ্ছে তাতে নদী নাব্যতা এখন হারানোর পথে। ইট ভাটার এই বিসাক্ত ধোয়ায় আশে পাশে অবস্থিত বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীগন চরম স্বাস্থ্য ঝুকিতে রয়েছে। ইট ভাটার মালিকগণ প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না।
জোনাকী ইট ভাটা মালিক মোঃ সায়েদ মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান, ইট ভাটাটির পরিবেশ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স আছে। তবে তা যথাসময়ে নবায়ন করা হয়নি বলে জানান।
কিশোরগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রুবাইয়াত সৌরভ জানান, ইট ভাটাটি দীর্ঘদিন যাবত সনাতন পদ্ধতিতে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আমি অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ভাটাটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঢাকায় মনিটরিং শাখায় রিপোর্ট প্রদান করেছি। আশা করি শীঘ্রই তাদের ব্যপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবো।
অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা মোঃ হারুন অর রশিদের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, তিনি সরাসরি অফিসে সাক্ষাতে কথা হবে বলে প্রতিবেদককে জানান।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রত্যেক ইটভাটাকে লাইসেন্স নবায়ন করাসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয়ার নির্দেশ দেয়া আছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে ব্যর্থ হবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। লাইসেন্স ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া জেলায় একটা ইট ভাটাও চলবে না।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সচেতন মহল দ্রুত এ বিষয়ে প্রশাসনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ কামনা করছেন।