মিয়া মোহাম্মদ ছিদ্দিক, কটিয়াদী প্রতিনিধি (কিশোরগঞ্জ): আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কিশোরগঞ্জ কটিয়াদী উপজেলার কৃষক শাহীন। ফুলকপির ভরা মৌসুমে তারা দাম ভালো না পেলেও অসময়ে ফুলকপির দামে পুষিয়ে নিবেন আশা করছেন। তাই সে আগাম জাতের ফুলকপির দিকেই ঝুঁকছে। ধানসহ অনান্য ফসলে চাষী যখন লাভের পরিবর্তে লোকসানের মুখ দেখছেন তখনই আগাম এ ফুলকপি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কিশোরগঞ্জের উপজেলার লোহাজুড়ি ইউনিয়নের ঝিড়ারপার গ্রামের মধু মিয়ার ছেলে কৃষক মোঃ শাহীন মিয়া। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ও সহায়তায় উপজেলার কৃষকরা আগাম ইয়াইট মাউন্টেন জাতের এ ফুলকপি চাষ করে ভালো দাম পাচ্ছেন।
কৃষক শাহীন মিয়া জানান, ধান, গমসহ অন্যান্য ফসল চাষ করে আমি খুব একটা লাভবান হতে পারিনি। ধান চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে আমার। তাই আমি আগাম ইয়াইট মাউন্টেন জাতের ফুলকপি চাষ করছি। শীতকালে ফুলকপির ভরা মৌসুমে দাম কম হয়। উপযুক্ত দাম পায় না। তাই আমি প্রতিবছরই এখন ফুলকপি চাষ করছি। তিনি আরো জানান,এছর আমি আমার ৪০ শতাংশ জমিতে আগাম লিডার জাতের ফুলকপির চাষ করেছি। এতে প্রায় ৫ হাজারের মতো গাছ রয়েছে। খরচ হয়েছে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার টাকা আরো লাগতে পারে ১০ হাজার টাকা। বাজারে এখন যে দাম রয়েছে তাতে আমি ১ লক্ষ টাকা বিক্রি হবে। ৭০-৭৫ হাজার টাকা লাভ হবে। বিশেষ করে আগাম কপি চাষে প্রথমদিকে পাতা পচা রোগ ও পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। কিন্তু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এবং লোহাজুড়ি ব্লকের উপ-সহকারি কর্মকর্তা সঠিক পরামর্শে ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক প্রয়োগ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষক শাহীন।
আরেক চাষী শরীফ মিয়া জানান,আমরাও শাহীন এর ফুলকপি চাষ দেখে এবং অন্য ফসলের তুলনায় ফুলকপি চাষ অধিক লাভজনক বিধায় আমি দেড় বিঘা জমিতে আগাম ফুলকপি চাষ করেছি। জমি থেকেই পাইকারী ক্রেতারা ফুলকপি কিনে নিয়ে যাচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা ধরে। প্রায় এক বিঘা জমিতে ৫০-৬০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।ইতিপূর্বে দেখা যেত শীতকালে জমিতে ফুলকপির চাষ হতো। সে সময় ভালো দাম পাওয়া যেতো না।এছাড়া স্থানীয় হাট-বাজার ছাড়াও আমাদের এখানের ফুলকপি ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম, গোপালগঞ্জ ,সিলেটে রপ্তানি হচ্ছে।ধান, গম, ভুট্টা, আলু, পেঁয়াজের তুলনায় অধিক লাভ এই আগাম ফুলকপিতে।
লোহাজুড়ি ব্লকের উপ-সহকারি মিজানুর রহমান জানান, আমার এ ব্লকে বর্তমানে ১৮ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছে চাষিরা। আমরা মাঠ পর্যায়ে সর্বক্ষন চারটি প্রযুক্তিসহ সার, কীটনাশক প্রয়োগ করে কৃষকরা যাতে উপকৃত হতে পারে সে লক্ষে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। মাঠ পর্যায় ছাড়াও মোবাইল, এ্যাপসের মাধ্যমে চব্বিশ ঘন্টা সেবা দিচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মুকশেদুল হক জানান,কৃষকেরা যাতে সবজি চাষ করে লাভবান হয়,সেই লক্ষে পর্যায়ক্রমে সবজি চাষ করার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। এই অঞ্চলের আবহাওয়া ও মাটি সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। চাষিরা আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। ফলে তারা ফুলকপি চাষের দিকে ঝুঁকছেন। আগাম কপিতে ঝুঁকি থাকলেও কৃষি বিভাগের পরামর্শে সফলতা পাচ্ছে বলে দাবি কৃষি বিভাগের।