ভিশন ডেস্ক: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে নিজ ঘরে ধর্ষণ চেষ্টায় বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ আরও ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার (৫ অক্টোবর) রাতে মামলার ৫নং আসামি সাজুকে (২১) ঢাকার শাহবাগ থেকে ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগকে (৪৮) একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বেগমগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হারুন উর রশীদ।
গ্রেফতারকৃত সাজু একলাশপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নোয়াব আলী বেপারী বাড়ির লোকমানের ছেলে, মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও একই এলাকার মৃত হাজী গোলাম মোস্তফার ছেলে।
ওসি মো. হারুন উর রশীদ আরও জানান, আদালতে ভিকটিমের জবানবন্দি অনুসারে ইউপি সদস্যকে ২২ ধারায় গ্রেফতার করা হয়।
এ ঘটনায় গত সোমবার দিনগত রাতে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে নির্যাতিতা গৃহবধূ (৩৫) বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব তিন দফায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকার নূর ইসলাম মিয়ার বাড়িতে গৃহবধূর বসতঘরে ঢুকে তার স্বামীকে পাশের কক্ষে বেঁধে রাখে স্থানীয় বাদল ও তার সহযোগীরা। এরপর গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করে তারা। এ সময় গৃহবধূ বাধা দিলে তারা তাকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে মোবাইলে ভিডিও চিত্র ধারণ করে।
ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, নির্যাতনকারীরা ওই গৃহবধূর পোশাক কেড়ে নিয়ে তার বিরুদ্ধে কিছু একটা বলতে থাকে। তিনি প্রাণপণে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেন এবং হামলাকারীদের ‘বাবা’ ডাকেন, তাদের পায়ে ধরেন। কিন্তু, তারা ভিডিও ধারণ বন্ধ করেনি। বরং হামলাকারীরা তার মুখে, শরীরে লাথি মারে। এরপর তার শরীরে একটা লাঠি দিয়ে মাঝে মাঝেই আঘাত করতে থাকে। এসময় ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার উল্লাস প্রকাশ করে ‘ফেসবুক’ ‘ফেসবুক’ বলে চিৎকার করে আরেকজন।
এদিকে এ ঘটনার পর অভিযুক্ত স্থানীয় দেলোয়ার, বাদল, কালাম ও তাদের সহযোগীরা নির্যাতিতা গৃহবধূর পরিবারকে কিছু দিন অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে তার পুরো পরিবারকে বসত বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করে। এ কারণে ঘটনাটি স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ প্রশাসনের অগোচরে থাকে।
তবে ওই ভিডিও চিত্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার ৩২ দিন পর রোববার (৪ অক্টোবর) গৃহবধূকে নির্যাতনের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেলে টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। সূত্র: বার্তা টুয়েন্টিফোর