ভিশন ডেস্ক: বাংলা চলচ্চিত্রের বর্ষীয়ান অভিনেতা সাদেক বাচ্চু আর নেই। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্ট থাকা অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আশিস চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সাদেক বাচ্চু সাহেব শতভাগ লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। কিন্তু তার হৃদযন্ত্র কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছিল। তিনি সকাল ১২টা ৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
গত ৬ সেপ্টেম্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি হন সাদেক বাচ্চু। উপসর্গ থাকায় তার করোনা পরীক্ষা করা হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে সেখান থেকে মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সাদেক বাচ্চুর জন্ম ১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে। পাঁচ দশকের দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে মঞ্চে, বেতারে, টিভিতে, সিনেমায়, সর্বত্র দাপুটে বিচরণ ছিল তার। নব্বই দশকে এহতেশামের ‘চাঁদনী’ সিনেমায় অভিনয়ের পর জনপ্রিয়তা পান খলনায়ক হিসেবে। এই পরিচয়েই দেশজুড়ে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে গুণী এই অভিনেতার।
১৯৬৩ সালে খেলাঘরের মাধ্যমে রেডিওতে অভিনয় শুরু করেন সাদেক বাচ্চু। তার প্রথম থিয়েটার ‘গণনাট্য পরিষদ। ’ ১৯৭২-৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে যখন এদেশের সাংস্কৃতিক বলয় নতুনভাবে তৈরি হচ্ছিল, তখন যোগ দেন গ্রুপ থিয়েটারে। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে ১৯৭৪ সালে প্রথম টেলিভিশন নাটকে অভিষিক্ত হন গুণী এই অভিনেতা। ‘রামের সুমতি’র মাধ্যমে যাত্রা শুরুর পর বহু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
সাদেক বাচ্চুর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- জোর করে ভালোবাসা হয় না (২০১৩), জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার (২০১৩), জীবন নদীর তীরে (২০১৩), তোমার মাঝে আমি (২০১৩), ঢাকা টু বোম্বে (২০১৩), ভালোবাসা জিন্দাবাদ (২০১৩), এক জবান (২০১০), আমার স্বপ্ন আমার সংসার (২০১০), মন বসে না পড়ার টেবিলে (২০০৯), বধূবরণ (২০০৮), ময়দান (২০০৭), আমার প্রাণের স্বামী (২০০৭), আনন্দ অশ্রু (১৯৯৭), প্রিয়জন (১৯৯৬), সুজন সখি (১৯৯৪)।
২০১৮ সালের ‘একটি সিনেমার গল্প’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সেরা খল চরিত্রাভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন সাদেক বাচ্চু।