ভ্রমণ ডেস্কঃ সাজেক ভ্যালি বাংলাদেশের ভ্রমনপ্রিয় মানুষদের জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান। সাজেক ভ্যালি রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। সাজেক রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও ভৌগলিক কারণে খাগড়াছড়ি জেলা হয়ে যেতে হয়। সাজেক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট উচ্চতায় সাজেকের অবস্থান। খাগড়াছড়ি জেলা থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার আর দীঘিনালা থেকে ৪০ কিলোমিটার। সাজেক যেতে হলে অবশ্যই বাঘাইহাট পুলিশ ও আর্মি ক্যাম্প থেকে অনুমতি নিতে হবে।
সাজেকে যা যা দেখবেন: প্রথমেই বলে রাখা ভালো সাজেকে প্রথম যেটির দেখা মিলবে তা হলো সাদা সাদা মেঘের ভেলা। কখনও মেঘ, কখনও রোদের লুকোচুরি খেলায় মন হারিয়ে যাবে অজানায়। সাজেক একেক সময় একক রূপ ধারণ করে। চারদিকের উঁচু নিচু পাহাড়, পহাড়ের ভাজে ভাজে সাদা মেঘের উড়াউড়ি এক নিমিশেই মন ভালো করে দেবে আপনার। সাজেকের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের কাছে সকল ক্লান্তি যেন হার মানে।
সাজেকে অবস্থিত কংলাক পাহাড় ভ্রমণ পিপাসুদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান। কংলাক পাহাড়ের কংলাক পাড়ায় লুসাই ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীদের বসবাস। কংলাক পাড়া থেকেই কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতের লুসাই পাহাড় দেখা যায়। রুইলুই পাড়া থেকে দুই ঘন্টা ট্র্যাকিং এর পথ। সেখানে কমলক ঝর্ণা যা অনেকের কাছে দাম তৈসা ঝর্ণা বা সিকাম তৈসা ঝর্ণা নামে পরিচিত। এই ঝর্নার শীতল পানি আপনার ক্লান্ত মনে শীতলতার পরশ বুলিয়ে দিবে।
রাতের সাজেক তো স্বপ্নে দেখা রূপকথার রাতের মতো। চারদিকে নিরবতা ভাঙ্গে পাহাড়ি ঝি ঝি পোকারা। মাথার উপরে খোলা আকাশের জোৎস্নার চাঁদ আর তারাদের মেলায় কখন হারিয়ে যাবেন হয়তো তা নিজেও জানবেন না। কখন যে চাঁদ, তারা আর মেঘেদের সাথে খেলতে খেলতে ঘুম রাজ্যে চলে যাবেন সকালে তা স্বপ্নের মতো মনে হবে।
সকালের সাজেক যেন সাদা ক্যানভাসে রংতুলির আচড়। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেই যখন দেখবেন আকাশের মেঘ সব আপনার কটেজের দরজায় মনে হবে মেঘ পিয়ন হয়তো বহুদিন পর প্রেয়সীর চিঠি হাতে বলছে- কোথায় ছিলে এতোদিন? একা একা মেঘেদের সাথে খেলে খেলে আমি যে বড় ক্লান্ত। তুমি এসেছো- এবার দুজনে হারিয়ে যাবো মেঘেদের স্বর্গরাজ্যে।
সাজেকের সকালে দেখতে হলে অবশ্যই আপনাকে খুব ভোরে উঠতে হবে। মেঘ আর সূর্যের খুনশুটি যে সকালেই জমে উঠে। আর তা দেখতে হলে আপনাকে চলে যেতে হবে সাজেক হ্যালিপ্যাডে। এখন থেকেই সাজেকের সূর্যোদয় ও সন্ধ্র্যায় সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন। সকাল সকাল সূর্যোদয় দেখে নাশতা সেরে ঘুরে আসুন কংলাক পাড়া থেকে। হ্যালিপ্যাড থেকে এক ঘন্টার ট্র্যাকিং করে যেতে হবে কংলাক পাহাড়ে। কংলাক থেকে দেখতে পাবেন ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরাম রাজ্য। কংলাক পাড়ায় বসবাসরত আধিবাসীদের জীবনযাত্রা ও ঘুরে দেখতে পারেন। সেখানকার আধিবাসীরা খুবই আন্তরিক। খুব সহজেই তাদের সাথে মিশে যেতে পারবেন। তাদের সহজ সরল জীবনযাত্রা আপনার ভ্রমণ পিপাসু মনে নতুন মাত্রা দিবে।
সাজেক যাওয়ার আগে বা পরে সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন খাগড়াছড়ি জেলার রিছাং ঝর্ণা, হাজাছড়া ঝর্ণা, খাগড়াছড়ি ঝুলন্ত ব্রীজ, আলুটিলা গুহা, বৌদ্ধ মন্দিরের মতো স্থান।
সাজেকে যাওয়ার সময়: সাজেক ভ্যালি মূলত সারা বছরই যাতায়াত করা যায়। শীতকাল ভ্রমণের সুন্দর সময় হলেও সাজেক বর্ষা, শরৎ, হেমন্তে বেশি সুন্দর।
কিভাবে যাবেন: সাজেকের অবস্থান রাঙামাটি জেলায় হলেও খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা হয়ে সাজেক যাতায়াত অনেক সহজ। তাই প্রথমেই আপনাকে খাগড়াছড়ি আসতে হবে। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যেতে চাইলে সৌদিয়া, শ্যামলি, শান্তি পরিবহন, এস আলম, ঈগল ইত্যাদি বাসে করে যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে নন এসি বাস ভাড়া ৫২০ টাকা, এসি বাসে যেতে চাইলে বিআরটিসি ও সেন্টমার্টিন পরিবহনে ৭০০ টাকা ভাড়ায় যেতে পারবেন। আর বাসগুলো সাধারণত রাত ১০ টার মধ্যে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়া শান্তি পরিবহন বাস সরাসরি দীঘিনালা যায়, ভাড়া ৫৮০ টাকা। ঢাকায় গাবতলী, কলাবাগানসহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে এইসব পরিবহণের কাউন্টার। ছুটির দিন গুলোতে যেতে চাইলে আগে থেকেই টিকেট কেটে রাখা ভালো নয়তো পড়ে টিকেট পেতে ঝামেলা পোহাতে হতে পারে।
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক এর দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরের কাছ থেকে জীপগাড়ি/চাঁন্দের গাড়ি রিজার্ভ নিয়ে সাজেক ভ্যালি ঘুরে আসতে পারবেন। যাওয়া আসা সহ দুইদিনের জন্যে ভাড়া নিবে ৮,০০০-১০,০০০ টাকা। এক গাড়িতে করে ১২-১৫ জন যেতে পারবেন। তবে লোক কম থাকলে অন্য কোন ছোট গ্রুপের সাথে কথা বলে শেয়ার করে গাড়ি নিলে খরচ কম হবে। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে সিএনজি দিয়ে সাজেক যেতে পারবেন। রিজার্ভ ভাড়া লাগবে ৪০০০-৫০০০ টাকা। তবে পাহাড়ি উঁচু নিচু রাস্তা বলে সিএনজি দিয়ে ভ্রমণ না করাই ভালো।
এছাড়া আপনি যদি একা বা ২-৩ জন হন তাহলে খাগড়াছড়ি শাপলা চত্ত্বর থেকে অনেক গ্রুপ পাওয়া যায়, সেখানে অন্য গ্রুপের সাথে কথা বলে তাদের সাথে শেয়ার করে যেতে পারবেন অথবা জিপ সমিতির অফিসে গেলে ওরা ম্যানেজ করে দিবে অন্য কোন গ্রুপের সাথে।
এছাড়া খাগড়াছড়ি থেকে দিঘীনালায় গিয়ে সেখান থেকে সাজেক যেতে পারবেন। খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালার দূরত্ব ২৩ কিলোমিটার। খগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা বাস ভাড়া ৪৫ টাকা, মোটর সাইকেল জনপ্রতি ভাড়া ১০০ টাকা। আবার চাইলে মোটরসাইকেল রিজার্ভ করে সাজেক ঘুরে আসা যায়। যে কোন গাড়ি ঠিক করার আগে কি দেখবেন, কি করবেন এইসব ভালো মত কথা বলে নিবেন।
তবে আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, যেভাবেই যান আপনাকে দিঘীনালায় ৯টা থেকে ৯টা ৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছাতে হবে। দিঘীনালা থেকে বাকি রাস্তা নিরাপত্তার জন্যে আপনাকে সেনাবাহিনীর এসকোর্টে যেতে হবে। সেনাবাহিনীর এসকোর্ট দিনে দুইবার পাওয়া যায়। সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে একবার, আবার ২ টা ৩০ মিনিটে আরেকবার। সকালের এসকোর্ট মিস করলে আপনাকে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, আর বিকেলের টা মিস করলে আপনাকে পরের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এসকোর্ট ছাড়া যাবার অনুমতি পাবেন না। দিঘীনালা পৌঁছে হাতে সময় থাকলে হাজাছড়া ঝর্ণা ঘুরে দেখে আসতে পারবেন।
দিঘীনালা থেকে যাবার পথে বাগাইহাট, মাচালং বাজার, তারপর রুইলুই পাড়া হয়ে পৌঁছে যাবেন সাজেকে। খাগড়াছড়ি শহর থেকে সাজেক যেতে সময় লাগবে দুই থেকে তিন ঘন্টা। এই সময় আঁকাবাঁকা উঁচু নিচু পাহাড়ি রাস্তা ধরে চলার সময়টুকু আপনার জন্যে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। চারদিকে সারি সারি পাহাড় আর সবুজের সমারোহ আপনাকে ভুলিয়ে দেবে পথের সব ক্লান্তি।
রাঙ্গামাটি থেকে সাজেক ভ্রমণ : রাঙ্গামাটি থেকে নৌপথ এবং সড়কপথ উভয়ভাবেই বাঘাইছড়ি যাওয়া যায়। রিজার্ভ বাজার লঞ্চঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ৭ টা ৩০ থেকে ১০টা ৩০ এর মধ্যে লঞ্চ ছাড়ে যেতে আর সময় লাগে ৫-৬ ঘন্টা। জনপ্রতি ভাড়া ১৫০-২৫০ টাকা। রাঙ্গামাটি বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ৭ টা ৩০ থেকে ৮ টা ৩০ ঘটিকার মধ্যে বাস ছাড়ে, জনপ্রতি ভাড়া নেয় ২০০ টাকা। সময় লাগে ৬-৭ ঘন্টা। এছাড়াও ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকেও সরাসরি বাঘাইছড়ি যাওয়া সম্ভব। বাঘাইছড়ি থেকে জীপ (চাদেঁর গাড়ি) অথবা মোটর সাইকেলে সাজেক ভ্যালীতে পৌঁছানো যায় এতে জনপ্রতি ভাড়া লাগে ৩০০/-টাকা।
কোথায় থাকবেন: সাজেকে থাকার জন্যে অনেক ৪০ এর অধিক রিসোর্ট ও আদিবাসী কটেজ আছে। এক রাতের জন্যে জনপ্রতি ২০০ টাকা থেকে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া পরবে। ছুটির দিনে যেতে চাইলে আগে মাসখানেক আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখা ভালো, নয়তো ভালো রুম পাবার নিশ্চিয়তা কম। আর কম দামে থাকতে চাইলে আদিবাসী কটেজ গুলোতে থাকতে পারেন। এছাড়া বর্তমানে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নতুন নতুন অনেক কটেজ হয়েছে। সাজেকের সব কটেজ থেকেই মোটামুটি সুন্দর ভিউ পাওয়া যায়।
সাজেকের রিসোর্ট ও কটেজ: রিসোর্ট রুংরাং (Resort RungRang) : সাজেকের বেস্ট রিসোর্ট গুলোর একটি রিসোর্ট রুংরাং। রিসোর্টে বসেই দিগন্তজোড়া সারি সারি পাহাড় এবং মেঘের উড়োউড়ি দেখার জন্য আদর্শ। নান্দ্যনিক ইন্টেরিওর ডিজাইনে সাজানো এই রিসোর্টে আছে ৪টি ডাবল এবং ৪টি কাপল রুম। ছুটির দিনে ডাবল বেড রুম ভাড়া ৩৫০০ টাকা এবং কাপল ২৮০০ টাকা। অন্য সকল দিনে ডাবল বেড রুম ভাড়া ২৮০০ এবং কাপল ২০০০ টাকা। রুংরাং রিসোর্ট ভ্রমণ গাইড ব্যবহারকারীদের জন্যে দিচ্ছে রুম বুকিং এ ৫-১০% ডিসকাউন্ট সুবিধা। বুকিং এর সময় রেফারেন্স হিসেবে আপনি ভ্রমণ গাইড ব্যবহারকারী বলুন আর উপভোগ করুন এই স্পেশাল অফার। বুকিং এর জন্যে যোগাযোগ নাম্বার: 01884-710 723, 01869-649 817
সাজেক রিসোর্ট (Sajek Resort) : বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত রিসোর্ট সাজেক রিসোর্ট। এই আর নন এসি রুম গুলোর ভাড়া ১০,০০০ – ১৫,০০০ টাকা। আছে খাবারে ব্যবস্থা। সেনাবাহিনিতে কর্মরত বা প্রথম শ্রেনীর সরকারি কর্মকর্তাদের জন্যে ডিসকাউন্ট রয়েছে। যোগাযোগ করতে পারেন এই নাম্বারেঃ 01859-025694, 01847-070395, 01769-302370
রুন্ময় রিসোর্ট (Runmoy Resort) : মোট ৫ টি রুম আছে। প্রতিটি কক্ষে ২ জন থাকতে পারবেন। নিচ তলার রুম ভাড়া ৪৪৫০ টাকা। প্রতিটি কক্ষে ২ জন থাকতে পারবেন। ৬০০ টাকা দিয়ে অতিরিক্ত বেড নিতে পারবেন। উপরের তলায় দুইটি কক্ষ আছে ভাড়া ৪৯৫০ টাকা। প্রতিটি কক্ষে দুই জন থাকতে পারবেন। এটাতেও ৬০০ টাকা দিয়ে অতিরিক্ত বেড নিতে পারবেন। যোগাযোগ: 0186547688
মেঘ মাচাং (Megh Machang) : সুন্দর ভিউ ও তুলনামূলক কম খরচে থাকার জন্যে মেঘ মাচাং রিসোর্ট অনেকের পছন্দ। আছে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা। মেঘ মাচাং-এ পাঁচটি কটেজ আছে । ভাড়া ২৫০০-৩৫০০ টাকা। যোগাযোগঃ 01822-168877, ফেসবুক পেইজ।
জুমঘর ইকো রিসোর্ট (Jumghor Eco Resort) : থাকার জন্যে কাপল রুম এবং শেয়ার রুম দুটাই আছে। কটেজ প্রতি ভাড়া ২০০০-৩০০০ টাকা। যোগাযোগঃ 01884-208060, ফেসবুক পেইজ।
লুসাই কটেজ (TGB Lushai Cottage) : কাপল রুম, ডাবল বেড সহ আছে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা। সুন্দর ডেকোরেশন ও ভালো ল্যান্ডস্কেপিক ভিউয়ের এই কটেজের রুমের ভাড়া ২০০০-৩০০০ টাকা। যোগাযোগঃ 01634-198005, ফেসবুক পেইজ।
মেঘ পুঞ্জি রিসোর্ট (Meghpunji Resort) : সুন্দর ইকো ডেকোরেশনের ও আকর্ষণীয় ল্যান্ডস্কেপিক ভিউ সহ মেঘপুঞ্জিতে আছে ৪টি কটেজ, প্রতিটিতে ৩-৪ জন থাকা যাবে। ভাড়া ২৫০০-৩৫০০ টাকা। যোগাযোগঃ 01815-761065, ফেসবুক পেইজ।
আলো রিসোর্ট (Alo Resort) : সাজেকের একটু আগে রুইলুই পাড়ায়। ৬ টি রুমের মধ্যে ডাবল রুম ৪ টি (২টি বেড)। ভাড়া ৮০০-১৫০০ টাকা। যোগাযোগঃ 01841-000645, ফেসবুক পেইজ।
আদিবাসী ঘর: এ ছাড়া আরও কম খরচে থাকতে চাইলে আদিবাসিদের ঘরেও থাকতে পারবেন। জনপ্রতি ১৫০-৩০০ টাকায় থাকা যাবে। ফ্যামিলি বা কাপল থাকার জন্যে আদর্শ না হলেও বন্ধু বান্ধব মিলে একসাথে থাকা যাবে।
সাজেক এর খাওয়া দাওয়া: সব রিসোর্টে খাবার ব্যবস্থা আছে তাই আগেই রিসোর্টগুলোতে বলে রাখলে পছন্দমত রান্না করে দিবে সেক্ষেত্রে প্রতিবেলা প্রতিজন ১০০-২৫০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে আর মেনু হিসেবে পাবেন ভাত আলুভর্তা, মুরগীর মাংস ইত্যাদি। চাইলে রাতে বার বি কিউও করতে পারবেন। এছাড়া আদিবাসী ঘরেও খাওয়া যায়, আগে থেকেই বলে রাখতে হবে কি খাবেন, তাহলে রান্না করে দিবে। সাজেকে খুব সস্তায় পেঁপে, আনারস, কলা ইত্যাদি ফল পাবেন চেখে দেখতে ভুল করবেন না।
সাজেক ভ্রমণ টিপস: সাজেকে বিদুৎ নেই, সোলার ব্যবস্থা থাকলেও চার্জ হতে বেশি সময় লাগে আর সহজলভ্যও নয়। সাথে করে পাওয়ার ব্যাংক রাখতে পারেন।
সাজেকে শুধুমাত্র রবি, এয়ারটেল ও টেলিটক এর নেটওয়ার্ক ভালো পাওয়া যায়।
সাজেক যাবার পথ অনেক আঁকাবাঁকা ও উঁচু নিচু, তাই এই পথ বিপদজনক। জীপের ছাঁদে ভ্রমনে সতর্ক থাকুন।
সাজেক যেতে গাইডের প্রয়োজন হয় না।
আদিবাসীদের ছবি তোলার ক্ষেত্রে তাদের অনুমতি নিয়ে নিন। অনুমতি ছাড়া ছবি তুলবেন না।
আদিবাসী মানুষজন সহজ সরল তাদের সাথে ভদ্র ব্যবহার করুন ও তাদের কালচারের প্রতি সম্মান দেখান।
ছুটির দিনে গেলে ঝামেলা এড়াতে আগে থেকেই (মাস খানেক) রুম বুকিং দিয়ে রাখুন।
যাবার পথে কয়েক জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প আছে। সেখানে ভ্রমণকারী সদস্যদের কিছু তথ্য জমা দিতে হয়। নিরাপত্তার সার্থে তাদের সহযোগিতা করুন। সাথে করে নিজের জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি রাখুন।
দুই তিন দিনের জন্যে গেলে গাড়ি বসিয়ে না রেখে, শুধু যাবার জন্যে গাড়ি ঠিক করুন, ফিরে আসার সময় অন্য কোন গাড়িতে আসুন কিংবা দিঘীনালা থেকে ফোন করে গাড়ি পাঠিয়ে ফেরত আসতে পারবেন।
অপ্রীতিকর পরিস্থিতির শিকার হলে নিকটস্থ থানার ফোন নম্বর:
বাঘাইছড়ি থানা: অফিসার ইনচার্জ: ০১৭১১-২৪৫১৮৮, ০১৮২২-৮৪৮১৩৩
সাজেক থানা: অফিসার ইনচার্জ: ০১৮২৪-৬১৩২৪৯